ভূগোল
দশম শ্রেণী
পূর্ণমান – ৫০
১. বিকল্পগুলি থেকে ঠিক উত্তরটি নির্বাচন করে লেখো : ১ x ৯ = ৯
১.১ অবরোহণ প্রক্রিয়ায় সৃষ্ট একটি ভূমিরূপ হলো—
ক) প্লাবনভূমি
খ) এস্কার
গ) গিরিখাত
ঘ) স্বাভাবিক বাঁধ
উত্তর: অবরোহণ প্রক্রিয়ায় সৃষ্ট একটি ভূমিরূপ হলো গিরিখাত
১.২ হিমবাহ ও পর্বতগাত্রের মধ্যে সৃষ্ট সঙ্কীর্ণ ফাঁক হলো –
ক) ফিয়র্ড
খ) বার্গস্রুণ্ড
গ) করি
ঘ) এরিটি
উত্তর: হিমবাহ ও পর্বতগাত্রের মধ্যে সৃষ্ট সঙ্কীর্ণ ফাঁক হলো বার্গস্রুণ্ড
১.৩ ঠিক জোড়াটি নির্বাচন করো
ক) লাদাখ- অঙ্গরাজ্য
খ) পুদুচেরী- কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল
গ) আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ -অঙ্গরাজ্য
ঘ) হরিয়ানা – কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল
উত্তর: খ) পুদুচেরী- কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল
১.৪ ঠিক জোড়াটি নির্বাচন করো –
ক) শৃঙ্খলিত শৈলশিরা – নদীর সঞ্চয়কাজ
খ) এরিটি – হিমবাহের সঞ্চয়কাজ
গ) অপসারণ গর্ভ – বায়ুর সম্বয়া
ঘ) বালিয়াড়ি- বায়ুর সঞ্চয়কাজ
উত্তর ঘ) বালিয়াড়ি- বায়ুর সঞ্চয়কাজ
১.৫ ক্রান্তীয় চিরহরিৎ অরণ্যের উদ্ভিদের অন্যতম একটি বৈশিষ্ট্য হলো –
ক) নির্দিষ্ট ঋতুতে এদের পাতা ঝরে যায়।
খ) পাতায় মোমের প্রলেপ থাকে
গ) উদ্ভিদের ভালপালা একসাথে যুক্ত হয়ে চাঁদোয়া সৃষ্টি করে
ঘ) এদের শ্বাসমূল থাকে
উত্তর: ক্রান্তীয় চিরহরিৎ অরণ্যের উদ্ভিদের অন্যতম একটি বৈশিষ্ট্য হলো – উদ্ভিদের ভালপালা একসাথে যুক্ত হয়ে চাঁদোয়া সৃষ্টি করে
১.৬ অতিবিরল জনঘনত্বযুক্ত একটি রাজ্য হলো
ক) পশ্চিমবঙ্গ
খ) গোয়া
গ) উত্তরপ্রদেশ
ঘ) সিকিম
উত্তর: অতিবিরল জনঘনত্বযুক্ত একটি রাজ্য হলো সিকিম
১.৭ আরোহণ প্রক্রিয়ায় সৃষ্ট একটি ভূমিরূপ হলো
ক) গিরিখাত
খ) রাসে মতানে
গ) বালিয়াড়ি
ঘ) গৌর
উত্তর: আরোহণ প্রক্রিয়ায় সৃষ্ট একটি ভূমিরূপ হলো বালিয়াড়ি
১.৮ ঠিক জোড়াটি নির্বাচন করো
ক) উত্তর-পশ্চিম ভারতের প্রাচীন ভঙ্গিল পর্বত – নীলগিরি
খ) দক্ষিণ ভারতের পূর্ববাহিনী নদী – নর্মদা
গ) আন্দামান-নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের চিরহরিৎ বৃক্ষ – মেহগনি
ঘ) উত্তর-পূর্ব ভারত – কৃষ্ণ মৃত্তিকা
উত্তর: গ) আন্দামান-নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের চিরহরিৎ বৃক্ষ – মেহগনি
১.৯ ভারতের রুঢ় বলা হয়
ক) জামসেদপুরকে
খ) দুর্গাপুরকে
(গ) ভিলাইকে
ঘ) বোকারোকে
উত্তর: ভারতের রুঢ় বলা হয় দুর্গাপুরকে
Table of Contents
২. শূন্যস্থান পূরণ করো ১ x ৩ = ৩
২.১ বায়ুর _________ প্রক্রিয়ায় বালি ও পলিকণা এক স্থান থেকে অন্য স্থানে অপসারিত হয়।
উত্তর: বায়ুর ভাসমান প্রক্রিয়ায় বালি ও পলিকণা এক স্থান থেকে অন্য স্থানে অপসারিত হয়।
২.২ ___________ পত্যকা পীরপাঞ্চাল ও উচ্চ হিমালয় পর্বতশ্রেণি দ্বারা বেষ্টিত। মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে ভারতে শীতকাল প্রায় শুষ্ক প্রকৃতির হয়।
উত্তর: কাশ্মীর পত্যকা পীরপাঞ্চাল ও উচ্চ হিমালয় পর্বতশ্রেণি দ্বারা বেষ্টিত। মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে ভারতে শীতকাল প্রায় শুষ্ক প্রকৃতির হয়।
২.৩ _____________ মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে ভারতে শীতকাল প্রায় শুষ্ক প্রকৃতির হয়।
উত্তর: উত্তর পূর্ব মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে ভারতে শীতকাল প্রায় শুষ্ক প্রকৃতির হয়।
৩. বাক্যটি সত্য হলে ‘ঠিক’ এবং অসত্য হলে ‘ভুল’ লেখো: ১ x ৩ = ৩
৩.১ নদীখাতে অবঘর্ষ প্রক্রিয়ায় সৃষ্ট গর্তগুলি হলো মন্থকূপ।
উত্তর: ঠিক
৩.২ ভারতের উপকূল অঞ্চলে দিনেরবেলা স্থলবায়ু প্রবাহিত হয়।
উত্তর: ভুল
৩.৩ শুষ্ক ও উষ্ণ আবহাওয়া চা চাষের পক্ষে আদর্শ।
উত্তর: ভুল
8. স্তম্ভ মেলাও : ১ x ৩ = ৩
ক স্তম্ভ | খ স্তম্ভ |
---|---|
৪.১ বিশুদ্ধ কাঁচামাল | (ii) তুলো |
৪.২ মালাবার উপকূল | (iii) কয়াল |
৪.৩ হিমবাহ | (i) ক্রেভাস |
৫. সংক্ষিপ্ত উত্তর দাও: ২ x ৪ = ৮
৫.১ পলল ব্যজনী কেন পর্বতের পাদদেশে সৃষ্টি হয়।
উত্তর: নদীর সঞ্চয়কাজের ফলে গঠিত ভুমিভাগ হল পলল ব্যজনী। প্রধানত এই ভুমিভাগ পলি গঠিত এবং ব্যজনী (হাত পাখা) এর মতো দেখতে বলে একে পলল ব্যজনী বলা হয়।
পার্বত্য অঞ্চল পার হয়ে যদি যখন সমভূমিতে এসে পরে, তখন ভূমির ঢাল কমে যাওয়ার ফলে নদীর স্রোত ও বহন ক্ষমতা হ্রাস পায়। এর ফলে সমভূমিতে অবতরণের সময় অর্থাৎ, পর্বতের পাদদেশীয় অঞ্চলে নদী-উপত্যকায় পলি, বালি, কাঁকর প্রভৃতি জমে ত্রিকোণ পলল ভূমির সৃষ্টি হয়।
৫.২ “ভারতের পশ্চিমবাহিনী নদীর মোহনায় বদ্বীপ গড়ে ওঠেনি – ভৌগোলিক কারণ ব্যাখ্যা করো।
উত্তর: ভারতের পশ্চিম বাহিনী নদীর মোহনায় বদ্বীপ না গড়ে ওঠার ভৌগোলিক কারণ গুলি নিচে আলোচনা করা হল-
(ক) খাড়া মহীসোপান: কাম্বে উপসাগরের মহীসোপান খাড়া হওয়ায় ক্ষয়জাত পদার্থ সমুদ্রতলে তলিয়ে যায়। ফলে মোহনায় ব-দ্বীপ গঠিত হতে পারে না।
(খ)কঠিন শিলাস্তর: নদীগুলি কঠিন আগ্নেয় ও রূপান্তরিত শিলায় গঠিত সংকীর্ণ গ্ৰস্ত উপত্যকার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় অত্যধিক ক্ষয়কাজ করতে পারে না। তাই নদীগুলিতে পলি ও বালির পরিমাণ কম হয়।
(গ) স্বল্পদৈর্ঘ্য: ভারতের পশ্চিম বাহিনী নদী গুলি স্বল্পদৈর্ঘ্যের এবং উপনদী কম হওয়ায় পলির যোগান কম হয়।
৫.৩ অক্ষাংশভেদে হিমরেখার উচ্চতা ভিন্ন হয়। ভৌগোলিক কারণ ব্যাখ্যা করো।
উত্তর : যে কাল্পনিক রেখার উপরে বরফ জমে থাকে বা যে কাল্পনিক রেখার নিচে বরফ গলে যায় তাকে হিমরেখা বলে। পৃথিবীর সর্বত্র হিমরেখা সব সময় একই উচ্চতায় বা একই স্থানে অবস্থান করে না। হিমরেখার উচ্চতা বা অবস্থান উষ্ণতার উপর বেশি নির্ভরশীল হওয়ায় অক্ষাংশ ভেদে হিমরেখার উচ্চতা ভিন্ন হয় কারণ নিরক্ষরেখা থেকে মেরুর দিকেসূর্য রশ্মির পতন কোণের তারতম্য লক্ষ্য করা যায়। ফলে ক্রমশ উষ্ণতা কমতে থাকে তাই নিরক্ষরেখা থেকে মেরুর দিকে হিমরেখার উচ্চতা ক্রমশ কমতে থাকে। মেরু অঞ্চলে তথা উচ্চ অক্ষাংশ বিশিষ্ট অঞ্চলে হিমরেখা সমুদ্র সমতলে অবস্থান করে। অক্ষাংশের মান যত কম হয় হিমরেখার উচ্চতা তত বৃদ্ধি পায়।
৫.৪ ভারতে জলবিভাজিকা উন্নয়নের দুটি উদ্দেশ্য লেখো।
উত্তর : যে পরিকল্পনার মাধ্যমে সমগ্র নদী অববাহিকা অঞ্চলের ভূমিক্ষয়, ধস, বন্যা ও খরা প্রতিরোধ করে জমি, মাটি, জল ও বনভূমির যথাযথ ব্যবহারের মাধ্যমে এই অঞ্চলের বাস্তুতন্ত্র পরিবেশের উৎপাদন ও সম্পদের স্থায়ী উন্নয়ন করা যায়, তাকে জলবিভাজিক উন্নয়ন বা ব্যবস্থাপনা বলে।
জলবিভাজিক উন্নয়ন ঘটানোর মূল উদ্দেশ্য গুলি হল-
(ক) জলবিভাজিকা উন্নয়নের প্রধান উদ্দেশ্য হলো প্রাকৃতিক উৎস গুলি থেকে পাওয়া জল ও সমাজে জলের চাহিদার মধ্যে ভারসাম্য রাখার ব্যবস্থা করা।
(খ) প্রাকৃতিক সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহার করা ও এলাকার সামগ্রিক পরিবেশের উন্নতি ঘটানো।
৬. নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর দাও : ৩ x ৩ = ৯
৬.১ ধাপ চাষ, ফালি চায় ও সমোন্নতি রেখা বরাবর চাষের মাধ্যমে কীভাবে মৃত্তিকা ক্ষয় প্রতিরোধ করা সম্ভব?
উত্তর : (ক) ধাপচাষ : মাটি সংরক্ষণের একটি গুরুত্বপূর্ণ পদ্ধতি হল ধাপচাষ। ধাপ চাষ পাহাড়ি অঞ্চলে ভূমিক্ষয়কে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। পাহাড়ি বা ঢালু জমিতে ঢাল অনুযায়ী সিঁড়ি বা ধাপ গঠন করলে ঢালের কৌণিক মান হ্রাস পায়।তাই ধাপ তৈরি করলে সেখানে জলের প্রবাহকে নিয়ন্ত্রণ করা যায়।
(খ) ফালি চাষ: পাহাড়ি অঞ্চলে ছোটো ছোটো অংশে পাহাড়ের ঢালু জমিতে আড়াআড়িভাবে ফিতাকৃতি জমি তৈরি করে ক্ষয় প্রতিরোধী শস্য চাষ করার পদ্ধতিকেই ফালি চাষ বলে। শিম, ডাল, সয়াবিন, ভুট্টা প্রভৃতি শস্য চাষ করা হয়। এই পদ্ধতিতে ভূমিক্ষয় রোধ হয় ও মাটির জলধারণ ক্ষমতা বাড়ে।
(গ) সমোন্নতি রেখা বরাবর চাষ: পার্বত্য অঞ্চলে উঁচু, নীচু এলাকায় সমান উচ্চতাযুক্ত বিন্দুগুলিকে যোগ করে যে রেখা পাওয়া যায় তাকে সমোন্নতি রেখা বলে। ওই রেখা বরাবর শস্যক্ষেত্র তৈরি করে কৃষিকাজ করা হয়। এতে জলপ্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়।
৬.২ নিম্নলিখিত বিষয়গুলির ভিত্তিতে নদী উপত্যকা ও হিমবাহ উপত্যকার পার্থক্য নিরূপণ করো
বিষয় | নদী উপত্যকা | হিমবাহ উপত্যকা |
---|---|---|
ক) সৃষ্টির প্রক্রিয়া | নদীবাহিত পাথরগুলি পরস্পরের সঙ্গে সংঘর্ষে বা নদীখাতের সঙ্গে ঘর্ষণের ফলে এই ভুমিরূপ তৈরি করে। | পার্বত্য অঞ্চলে যে উপত্যকার মধ্যে দিয়ে হিমবাহ প্রবাহিত হয়, সেখানে অবঘর্ষ প্রক্রিয়ায় হিমবা উপত্যকার সৃষ্টি হয়। |
খ) উপত্যকার আকৃতি | শুষ্ক বা অর্ধ-শুষ্ক অঞ্চলে পার্শ্বক্ষয়ের চেয়ে নিম্নক্ষয়ের মাত্রা বেশি হয় বলে ‘1’ আকৃতির এবং আর্দ্র বা আর্দ্রপ্রায় অঞ্চলে নিম্নক্ষয়ের সঙ্গে সঙ্গে কিছুটা পার্শ্বক্ষয়ও হতে থাকে বলে ‘v’ আকৃতির উপত্যকা সৃষ্টি হয়। | পার্বত্য অঞ্চলে যে উপত্যকার মধ্যে দিয়ে হিমবাহ প্রবাহিত হয়, সেখানে অবঘর্ষ প্রক্রিয়ায় হিমবা উপত্যকার তলদেশ ও পার্শ্বদেশ প্রায় সমানভাবে না মসৃণ হয় এবং এর ফলে উপত্যকার আকৃতি ইংরেজি ‘ অক্ষরের মতো হয়। |
গ) অবস্থান | শুষ্ক-মরু অঞ্চল ও তুষারাবৃত অঞ্চল ছাড়া নদী উপত্যকা ভূপৃষ্ঠের প্রায় সর্বত্রই দেখা যায়। | হিমবাহ উপত্যকা শুধুমাত্র সুউচ্চ পার্বত্য অঞ্চল ও শীত মেরু অঞ্চলেই সীমাবদ্ধ। |
৬.৩ হিমালয় পর্বতমালা কীভাবে ভারতীয় জলবায়ুকে নিয়ন্ত্রণ করে?
উত্তর: হিমালয় পর্বতমালা ভারতের উত্তরে প্রহরীর মতো বিরাজমান হয়ে ভারতের জলবায়ুকে গভীরভাবে প্রভাবিত করেছে।
i) তীব্র শীত থেকে রক্ষা : হিমালয় পর্বতমালা ভারতের উত্তরে অবস্থান করায় শীতকালে সাইবেরিয়া থেকে আসা অতি শীতল বায়ু ভারতের অভ্যন্তরে প্রবেশ করতে পারে না। ফলে শীতের তীব্রতা কম থাকে।
ii) শৈলোৎক্ষেপ বৃষ্টিপাতে সহায়তা: ভারতের দক্ষিণ দিক থেকে আসা মৌসুমী বায়ু হিমালয়ের দক্ষিণ ঢালে অর্থাৎ প্রতিবাদ ঢালে বাধা পেয়ে গাঙ্গেয় সমভূমি তে শৈলোৎক্ষেপ বৃষ্টিপাত ঘটায়।
iii) আরামদায়ক জলবায়ু : হিমালয় পর্বতমালার উচ্চতা অনেক বেশি হওয়ায় উপত্যাকা অঞ্চলে আরামদায়ক জলবায়ু বিরাজ করে।
iv) মৌসুমী বায়ুর নিয়ন্ত্রক : হিমালয় পর্বতমালা মৌসুমী বায়ুর গতিপথ কে নিয়ন্ত্রণ করে থাকে।
v) পশ্চিমী ঝঞ্ঝঞ্ঝার প্রাদুর্ভাব থেকে রক্ষা : ভারতের উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে আগত পশ্চিমী ঝঞ্ঝার প্রভাব হিমালয়ের জন্য বাধাপ্রাপ্ত হয় পূর্বদিকে বেশি দূর অগ্রসর হতে পারে।
৭. নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর দাও : ৫ x ৩ = ১৫
৭.১ হিমবাহের সঞ্চয় কার্যের ফলে গঠিত বিভিন্ন প্রকার গ্রাবরেখার সচিত্র বর্ণনা দাও।
উত্তর : গ্রাবরেখা : হিমবাহ ক্ষয়জাত পদার্থগুলিকে হিমবাহের সাথে বাহিত হয়ে উপত্যকার বিভিন্ন অংশে সঞ্জিত হয়। এরূপ সঞ্চয়কে গ্রাবরেখা বলে। অবস্থানের ভিত্তিতে গ্রাবরেখা বিভিন্ন প্রকার-
পার্শ্ব গ্রাবরেখা : হিমবাহ পদার্থকে ঠেলে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার সময় দুই পাশে পদার্থ সঞ্চিত হয়ে সৃষ্ট গ্রাবরেখা হল পার্শ্ব গ্রাবরেখা।
মধ্য গ্রাবরেখা : দুটি হিমবাহ পাশাপাশি প্রবাহিত হলে মিলন অঞ্চলে সঞ্চিত গ্রাবরেখা হল—মধ্য গ্রাবরেখা,
প্রান্ত গ্রাবরেখা : হিমবাহ যেখানে এসে শেষ হয় অর্থাৎ গলে যায় সেখানে পদার্থ সজ্জিত হয়ে সৃষ্ট ভাবরেখা হল প্রান্ত গ্রাবরেখা।
হিমবাহের তলদেশে পদার্থ সজ্জিত এ ছাড়া হয়ে সৃষ্ট গ্রাবরেখা হল ভূমি গ্রাবরেখা।
বলয়াকারে সজ্জিত গ্রাবরেখা হল বলয়ধর্মী আবরেখা,
সমুদ্রের তলদেশে সজ্জিত। প্রাবরেখাকে স্তরায়িত আবরেখা বলে। কাশ্মীরের লিডার ও কোলাহই উপত্যকায় বিভিন্ন প্রকার গ্রাবরেখা দেখা যায়।
৭.২ ভারতের কোন অঞ্চলে অধিকাংশ কফি উৎপাদন করা হয়? এই বাগিচা ফসল চাষের অনুকূল প্রাকৃতিক পরিবেশের বর্ণনা দাও।
উত্তর : ভারতের কর্ণাটকের চিকমাগালুরে অধিকাংশ কফি উৎপাদন করা হয়। চিকমাগালুর ভারতের কফি উৎপাদক কেন্দ্র।
কফি চাষের অনুকূল প্রাকৃতিক পরিবেশ হল –
প্রাকৃতিক পরিবেশঃ-[i] জলবায়ু: ক্রান্তীয় অঞ্চলের উয়-আর্দ্র পরিবেশ, বিশেষত নিরক্ষীয় আবহাওয়ায় কফি চাষ ভালো হয়।[a] উয়তা: কফি চাষের জন্য বেশি উন্নতার প্রয়োজন। সাধারণত 20-25 °সে উন্নতায় কফি চাষ করা হয়।
[b] বৃষ্টিপাতঃ 150 থেকে 250 সেন্টিমিটার বা তারও বেশি বৃষ্টিপাত হলে কফি চাষ ভালো হয়।
[c] ছায়া: কফি চারাগাছগুলিকে প্রখর সূর্যরশ্মি থেকে বাঁচানোর জন্য বাগিচার মধ্যে ছায়াপ্রদায়ী গাছ হিসেবে কলা, ভুট্টা প্রভৃতি বড়ো পাতার গাছ রোপণ করা হয় |
[ii] মৃত্তিকা: লাভা-সৃষ্ট উর্বর মাটি এবং লাল দোআঁশ মাটি কফি চাষের উপযোগী।
[iii] ভূমির প্রকৃতি: ঢালু উচ্চভূমি, বিশেষত পর্বতের পাদদেশে কফি গাছ ভালো হয়। দক্ষিণ ভারতের দক্ষিণ কর্ণাটক, পার্বত্য অন্ধ্রপ্রদেশ, উত্তর কেরলের পার্বত্য অঞ্চল ও তামিলনাড়ুর উত্তরাংশে প্রচুর কফি উৎপন্ন হয়।
৭.৩ ভারতীয় জনজীবনে নগরায়ণের নেতিবাচক প্রভাবগুলি উল্লেখ করো।
উত্তর: যে কোন সমাজ ব্যবস্থায় গ্রাম্য অবস্থা থেকে ধীরে ধীরে শহর অবস্থায় পরিণত হওয়ার প্রক্রিয়াকে নগরায়ন বলে।পৃথিবীর অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশ গুলির মতো ভারতেও নগরায়ন আর্থ সামাজিক উন্নতিতে গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা পালন করলেও এর কিছু নেতিবাচক প্রভাব রয়েছে।
i) অপরিকল্পিত নগরায়ণ : ভারতে নগরায়ণের সবচেয়ে বৃহৎ সমস্যা হলো ভারতে কোনো পরিকল্পনা ছাড়াই নগরায়ণের বিকাশ হচ্ছে। মোট পৌরবাসীর প্রায় 70% প্রথম শ্রেণির শহরে বাস করে। যার মধ্যে 42.6% মানুষ 53টি মিলিয়ন সিটিতে বাস করে, ফলে শহরে রাস্তাঘাট প্রত্যহ যানজট সমস্যা নেয়। সরকারি ও বেসরকারি কর্মসংস্থান অন্যান্য ক্ষেত্র সব শহরেই অবস্থিত। ফলে মানুষকে কর্মের জন্য শহরে ভিড় বাড়াতে হয়। যেমন—মুম্বাই, কলকাতা, ব্যাঙ্গালুরু।
ii) বাসস্থানের অভাব – ভারতীয় বড়ো বড়ো নগর গুলিতে জনসংখ্যার চাপ এতোটাই বেশি যে সকল মানুষের জন্য বাসস্থান বা আবাসস্থলের অভাব দেখা দিচ্ছে। যার ফলে বস্তির উদ্ভব দেখা যায়। মুম্বাই শহরে অবস্থিত ধারাবি বস্তী ভারত তথা পৃথিবীর বৃহত্তম বস্তি।
iii) জলনিকাশি ব্যবস্থা : পূর্ব ভারতের শহর সংলগ্ন নদীগুলিতেই পৌর আবর্জনা নিক্ষেপ করা হত। কিন্তু পরিবেশ সচেতনতা বাড়ায় তা সম্পূর্ণভাবে বন্ধ হয়েছে। বেশিরভাগ শহরে বিকল্প ব্যবস্থা গড়ে না ওঠায় সমস্যায় ভুগছে।
iv) বিদ্যুৎ সরবরাহ জনিত সমস্যা : শিল্প, পরিবহন, বানিজ্য, সামাজিক কাজে তাই নগর বা শহরাঞ্চলে প্রচুর বিদ্যুতের প্রয়োজন হয় কিন্তু ভারতের প্রায় প্রতিটি শহরে চাহিদার তুলনায় বিদ্যুতের জোগানে ঘাটতি দেখা যায়।
v) শহরমুখী প্রবণতা : সাম্প্রতিককালে গ্রাম থেকে দলে দলে মানুষ কাজ, সুযোগ-সুবিধা, শিক্ষাসহ আরও উন্নত জীবনযাপনের আশায় শহরে আসছে। 2011 খ্রিস্টাব্দের জনগণনায় দেখা গেছে, ভারতে এই প্রথম গ্রামীণ মোট জনসংখ্যার বৃদ্ধির চেয়ে শহরে মোট জনসংখ্যা বেড়েছে 32.12%।